স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়-Significant cyclones hit BD-ultimate bangla



প্রকৃতি যেমন আমাদের পালন করে, তেমন৷ আমাদের জীবন কেড়ে নিতে ও তার একটু সময় লাগে না। আর এর জন্য আমরা মানুষরাই অনেকটা দায়ী। সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় এক নিমেষের মধ্যে আমাদের সভ্যতা কে ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। আজকে আমরা আলোচনা করবো স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের কয়েকটি বড় ঘূর্নিঝড় নিয়ে।


পরবর্তী ভিডিও আপডেট পাওয়ার জন্য অবশ্যই আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে পাশে নোটিফিকেশন বেলটি অন করে রাখুন

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে আঘাত হানা শক্তিশালী যত ঘূর্ণিঝড়:
১৯৮৮ এর ঘূর্ণিঝড়:
১৯৮৮ সালের নভেম্বরের ঘূর্ণিঝড় লণ্ডভণ্ড করে দিয়ে যায় যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর এবং বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায়৷ বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার৷ এই ঘূর্ণিঝড়ে পাঁচ হাজার ৭০৮ জন প্রাণ হারান৷
১৯৯১ এর ঘূর্ণিঝড়:
ভারত মহাসাগরে উৎপত্তি হওয়া প্রবল এই ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ২২৫ কিলোমিটার৷ এটি মূলত চট্টগ্রাম ও বরিশাল উপকূলে আছড়ে পড়েছিল৷ ঝড়ের প্রভাবে ১২ থেকে ২২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হয়৷ ২৯-৩০ এপ্রিলের এই ঘূর্ণিঝড়কে আখ্যা দেওয়া হয় ‘শতাব্দীর প্রচণ্ডতম ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে৷ এতে প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল বলে জানা যায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এক কোটির বেশি মানুষ৷
১৯৯৭ এর ঘূর্ণিঝড়:
১৯৯৭ সালের ১৯ মে বাংলাদেশের সীতাকুণ্ড ও এর আশেপাশের এলাকায় আরেকটি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ে৷ ঘণ্টায় ২৩২ কিলোমিটার বেগের বাতাসের সঙ্গে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় এলাকা প্লাবিত হয়৷ এরপর আরো কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল৷ তবে সেগুলো বাতাসের গতিবেগ ছিল কম৷
ঘূর্ণিঝড় সিডর:
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর দেশের দক্ষিণ উপকূলে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় সিডর প্রায় ছয় হাজার মানুষের প্রাণ কেড়ে নিয়েছিল৷ যদিও রেডক্রিসেন্টের হিসাব মতে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার৷ উত্তর ভারত মহাসাগরে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছে সৃষ্ট এ ঝড়ে বাতাসের গতিবেগ ছিল ২৬০ থেকে ৩০৫ কিলোমিটার৷ সিডর খুলনা ও বরিশাল এলাকায় তাণ্ডব চালায়৷ সমুদ্র থেকে উঠে আসা ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে সব কিছু ভেসে যায়৷ ঝড়ে তিন হাজরের বেশি মানুষ মারা যায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৩২টি জেলার ২০ লাখ মানুষ৷ উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ছয় লাখ টন ধান নষ্ট হয়ে যায়৷ সুন্দরবনের প্রাণীদের পাশাপাশি অসংখ্য গবাদিপশু ‍মারা যায়৷


ঘূর্ণিঝড় আইলা:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও খুলনা উপকূলে ২০০৯ ‍সালে ২৫ মে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা'৷ এই ঘূর্ণিঝড় ভারতের ১৪৯ জন ও বাংলাদেশের ১৯৩ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়৷ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশে উপকূলে প্রায় তিন লাখ মানুষ গৃহহীন হয়৷
ঘূর্ণিঝড় মহাসেন:
ঘূর্ণিঝড় ‘মহাসেন’ ২০১৩ সালের ১৬ মে নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে৷ এটির বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার৷ এই ঝড় বাংলাদেশে ১৭ জনের প্রাণ কেড়ে নেয়৷
ঘূর্ণিঝড় কোমেন:
ঘূর্ণিঝড় কোমেন ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আঘাত হানে৷ বাতাসের গতি ছিল ৬৫ কিলোমিটার৷ কোমেনের প্রভাবে মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও ভারতে প্রচুর পরিমাণে বৃষ্টিপাত হয়েছিল৷
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু:
রোয়ানু একটি ছোট ঘূর্নিঝড়, যা ২০১৬ সালে ২১ মে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে এবং ভারতে আংশিক অঞ্চলে আঘাত হানে৷ ধারণা করা হয়, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ব্যাপ্তি ছিল দুটি বাংলাদেশের সমান আকৃতির৷ রোয়ানু-র আঘাতে চট্টগ্রামে ২৬ জনের মৃত্যু হয়৷
ঘূর্ণিঝড় মোরা:
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোরা ২০১৭ সালের ৩০ মে ১৪৬ কিলোমিটার বাতাসের গতিতে কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে৷ ঝড়ের তাণ্ডবে হাজার হাজার কাঁচা ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়৷ কক্সবাজারে বিদ্যুৎব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে৷ জমির ফসল এবং লবন চাষীদের জমাকৃত লবন নষ্ট হয়ে যায়৷ দুজন নারীসহ তিনজন মারা যায়৷
ঘূর্ণিঝড় ফণী:
২০১৯ ‍সালের ৩ মে বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণীর আঘাতে বাংলাদেশে নয় জনের মৃত্যু হয়৷ তবে প্রাণহানি কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান ছিল অনেক বেশি৷ সরকারি হিসাব মতে, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে ঘরবাড়ি, বাঁধ, সড়ক ও কৃষিতে ৫৩৬ কোটি ৬১ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়৷
ঘূর্ণিঝড় বুলবুল:
বার বার দিক বদল করে ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর অতিপ্রবল এই ঘূর্ণিঝড় বুলবুল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার সাগর দ্বীপ উপকূলে আঘাত হানার পর স্থলভাগ দিয়ে বাংলাদেশে আসায় ক্ষয়ক্ষতি আশঙ্কার চেয়ে কম হয়৷ ঝড়ে মারা যায় ২৪ জন৷ ৭২ হাজার ২১২ টন ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়, যার আর্থিক মূল্য ২৬৩ কোটি পাঁচ লাখ টাকা৷ ক্ষতি হয়েছে সুন্দরবনেরও৷
আমফান:
সুপার সাইক্লোন আম্পান একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়, যা বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী ভারতের পূর্বাংশে এবং বাংলাদেশে আঘাত হানে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল, ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকির মধ্যে ছিল। এ শতাব্দীতে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এটিই প্রথম সুপার ঘূর্ণিঝড়।
বাংলাদেশে আঘাত হেনেছে আমফান 20.05.2020
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির নেতা শাহ আলম সহ ঝড়-সংক্রান্ত ঘটনায় কমপক্ষে ২০ জন মারা গিয়েছিলেন, যিনি তাঁর নৌকোটি উল্টে ডুবে মারা যান।দেশজুড়ে প্রাথমিক ক্ষতি ৳ ১১০০ কোটি (মার্কিন ১৩ কোটি ডলার) পৌঁছেছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে ১ কোটিরও বেশি লোক বিদ্যুৎবিহীন হয়েছিল।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং হচ্ছে বঙ্গোপসাগরের উপর সৃষ্ট একটি ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন।
২৪ অক্টোবর ২০২২ তারিখে ঘূর্ণিঝড় অশনি
সাইক্লোন: ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ভোলা থেকে প্রবেশ করে লঘুচাপে পরিণত, অন্তত ৯ জন নিহত
ঘূর্ণিঝড় সিতাংয়ের কারণে দক্ষিণের জেলাগুলোর অনেক এলাকা সোমবার সন্ধ্যা থেকেই বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে

No comments

Theme images by chuwy. Powered by Blogger.